অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হোক কিংবা ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট, রিসার্চ পেপার তৈরির খসড়া হোক কিংবা ফেসবুকের ক্যাপশন—সব ক্ষেত্রেই চ্যাটজিপিটি এখন অনেকের নিত্যসঙ্গী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিনির্ভর এই প্ল্যাটফর্মটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার বাইরেও বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ, লেখালেখি ও পরামর্শে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে প্রযুক্তির এই সুবিধা ব্যবহার করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত অনেকেই বিপদে পড়ছেন। কারণ, ভুল ধরনের তথ্য চ্যাটজিপিটির মতো চ্যাটবটের সঙ্গে শেয়ার করলে তা ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
নিচে এমন কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো, যা কখনোই চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা ঠিক নয়:
ব্যক্তিগত শনাক্তকরণ তথ্য
আপনার নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ঠিকানা, ফোন নম্বর বা ই-মেইল অ্যাড্রেসের মতো তথ্য কোনোভাবেই চ্যাটবটে দেওয়া উচিত নয়। যদিও চ্যাটজিপিটি ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য সংরক্ষণ করে না, তবে তৃতীয় পক্ষের হাতে এসব তথ্য চলে গেলে তা দিয়ে আপনার পরিচয় চুরি, জালিয়াতি বা হয়রানি ঘটতে পারে।
ব্যাংক ও লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পিন বা ওটিপি জাতীয় সংবেদনশীল তথ্য কখনোই শেয়ার করা যাবে না। এ ধরনের তথ্য ফাঁস হলে সাইবার অপরাধীরা আপনার অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে।
পাসওয়ার্ড
যে কোনো অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড চ্যাটজিপিটিকে দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। একবার তথ্য ফাঁস হলে আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা ও শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার এবং টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখা জরুরি।
ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য
চ্যাটজিপিটি একটি সফটওয়্যার। এটি আপনার গোপনীয়তার গুরুত্ব বুঝবে না। ফলে আপনি যদি পারিবারিক, ব্যক্তিগত বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করেন, তাহলে তা ভবিষ্যতে ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।
মেধাসম্পদ ও উদ্ভাবনী ধারণা
নিজের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, নতুন আইডিয়া, কোডিং বা ডিজাইন, গবেষণাপত্র বা যেকোনো সৃজনশীল কাজ চ্যাটজিপিটিতে দিয়ে থাকেন? তাহলে সতর্ক হোন। আপনার মেধাসম্পদ চ্যাটজিপিটির প্রশিক্ষণ ডেটায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এবং অন্য ব্যবহারকারীর কাছেও কোনোভাবে তা পৌঁছে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে সচেতন না হলে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও পেশাগত গোপনীয়তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই প্রযুক্তি ব্যবহারে যেমন সুবিধা আছে, তেমনি রয়েছে ঝুঁকিও—যা বুঝে ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ।